সন্ধান করুন

শনিবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৬

নিঃসন্তান দম্পতিদের জন্য কার্যকর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা


বিবাহিত দম্পতিদের সন্তান না হওয়ার বিড়ম্বনা সব সমাজেই বিদ্যমান। সাধারণত ২০-৩৫বছর বয়স্ক দম্পতিরা একত্রে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে জীবনযাপন করে এবং কোনো প্রকার জন্মনিয়ন্ত্রণের সাহায্য না নিয়ে যদি এক বছরের মধ্যে সন্তান উৎদপাদনে সক্ষম না হন তাহলে তাদের বìধ্যত্ব হয়েছে বলা যাবে। যদিস্ত্রীর বয়স ২৫ কিংবা তার বেশি হয়, তাহলে সময়সীমা (দাম্পত্য জীবন) হবে ছয় মাস। এক সমীক্ষায় জানা যায়, ২০-৪০ বছর বয়সের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ২০ শতাংশ সন্তান উৎপাদনে অক্ষম।

সন্তানহীন দম্পতিদেরমধ্যে প্রায় ৪৮ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষের দোষেই এটা হয়ে থাকে। অথচ সন্তানহীনতার দায় অনেক ক্ষেত্রে মেয়েদের বহন করতে হয়। অনেক মেয়েকে এ জন্য অনেক নির্যাতনও সহ্য করতে হয় পরিবার ও সমাজের কাছ থেকে। সন্তানহীনতার অভিযোগে স্ত্রীকে ত্যাগ করে অনেক স্বামী আবারো বিয়ে করে থাকেন সন্তানের আশায়। কিন্তু বাস্তবে সন্তান না হওয়ার দায় কেবল স্ত্রীর নয়, স্বামীরও। তাই সন্তানহীন দম্পতি পরীক্ষার সময় স্বামী ও স্ত্রীউভয়কেই ভালোভাবে পরীক্ষা করা উচিত।

এখানে সন্তানহীনতার বিষয়টিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখা হলেও ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে এর প্রকৃত কারণ বোঝার দরকার আছে। কুরআনের সূরা আশ-শূরা,আয়াত ৪৯-৫০-এ বলা হয়েছে, ‘নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তায়ালারই। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন,যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তানদান করেন। অথবা তাদের দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ইএবং যাকে ইচ্ছা বìধ্যা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজন ও ক্ষমতাশীল।’ তাই যারা মুসলিম তাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানের কারণ উপাত্ত জানার পরও কুরআনের আলোকে বিষয়টিকে বুঝতে হবে। এ ছাড়া চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকেও দেখা যাচ্ছে, স্বামী-স্ত্রী সব দিক থেকে স্বাভাবিক হলেওএবং নিয়ন্ত্রণহীন নিয়মিত সহবাস করলেও যে তাদের সন্তান হবেই এ কথা বলা যায় না। সুস্খ, স্বাভাবিক এবং ইচ্ছুক দম্পতিদের সন্তান কবে হবে তা সব সময় বলা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সব সময়েই কিছু অনিশ্চয়তা থেকে যায়। তাই কুরআনের ওই সিদ্ধান্তকেই সবার স্মরণে রাখা উচিত।

আমরা জেনেছি, বছরব্যাপী স্বাভাবিক দাম্পত্যজীবনে সন্তান না এলে তাকে বìধ্যত্ব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যেসব ক্ষেত্রে মহিলার গর্ভসঞ্চার হচ্ছে, কিন্তু জীবিত সন্তান প্রসব হচ্ছে না। এটাও এক ধরনের বìধ্যত্ব। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত স্বামীর ত্রুটি থাকেনা। যেসব ক্ষেত্রে গর্ভধারণ একবারো হয়নি, সেখানে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই ত্রুটি থাকতে পারে। আবার অনেক সময় প্রথম সন্তানের পর দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দম্পতির ইচ্ছা এবং চেষ্টা সত্ত্বেও বিলম্বিত হয়। এ-ও একধরনের বìধ্যত্ব। একে সাময়িক বìধ্যত্ব বলা হয়।

পুরুষের যেসব অসুখের কারণে স্ত্রীর সন্তান লাভ সম্ভবহয় না তার মধ্যে রয়েছে অন্তস্রাবী গ্রন্থির অসুখ,যেমন হাইপোথ্যালামাসের রোগ, কলম্যানস সিনড্রম। এটি একটি বংশগত রোগ। পিটুইটারী গ্রন্থির অসুখ, যেমন টিউমার, সিস্ট ইত্যাদি। থাইরয়েড হরমোনের অভাব বা মিক্সিডিমা। এ ছাড়া রয়েছে জিনঘটিত কারণ যেমন¬ প্রকৃত যৌনগ্রন্থির অভাব, জন্মগতভাবে অণ্ডকোষ না হওয়া ইত্যাদি। আবার ‘ক্লাইন ফেলটার সিনড্রোম নামক একপ্রকার ক্রোমজমের অসুখের ফলেও শুক্রকীটের অভাব হতে পারে।

অন্তস্রাবী গ্রন্থি ছাড়াও আরো অনেক কারণে পুরুষ বìধ্যত্ব দেখা দিতে পারে। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে পুষ্টির অভাব, বিশেষত ভিটামিন বি এবং ই। অতিরিক্ত ধূমপান, অতিরিক্ত মদপান। অতিরিক্ত গরমে যারা কাজ করেন, যেমন¬ বাস, ট্রাকচালক, খনিশ্রমিক। এদের শুক্রকীটের পরিমাণ কম হতে পারে। কারণ শুক্রকীটের জন্ম ও বৃদ্ধির জন্য একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার প্রয়োজন। ভেরিকোসিল, জীবাণু সংক্রমণ, মাম্পসের কারণে অণ্ডকোষের প্রদাহ, গনোরিয়া, যক্ষ্মা, কিডনি, মূত্রনালী বা মূত্রাশয়ের সংক্রমণ, ডায়াবেটিস মেলাইটাস, শুক্রকীটের গতিপথে কোনো প্রকার বাধা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব, প্রভৃতি কারণেও পুরুষের বìধ্যত্ব হতে পারে।

ক্যান্সারের ওষুধ ব্যবহার, মানসিক অবসাদের ওষুধ, ম্যালেরিয়ারওষুধ, কিছু উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, বিকিরণ বা রে, ইত্যাদিও বìধ্যত্বের কারণ হতে পারে। বìধ্যত্বের এসব জানা কারণ ছাড়াও ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো কারণ পাওয়া যায় না। এ জন্য নি:সন্তান দম্পতিদের চিকিৎসায় রোগীরইতিহাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের ইতিহাসে তার শৈশবও বাল্যকালের অসুখ, পুরাতন ও দীর্ঘস্খায়ী অসুখ, পারিবারিক অসুখ, পেশা, ধূমপান, মদ্যপানের ইতিহাস, ওষুধের নেশা, শল্য চিকিৎসা ও আঘাতের বিবরণ এবং বিবাহিত জীবনের ইতিহাস। পুরুষের বীর্য পরীক্ষা ছাড়াও প্রয়োজন হতে পারে টেসটিসের বাইয়পসি, বীর্য কালচার, বিভিন্ন হরমোনের পরিমাণ, ক্রোমজম পরীক্ষা ইত্যাদি।

মহিলাদের যেসব কারণে বìধ্যত্ব দেখা দিতে পারে, যেমন- যেকোনো দীর্ঘস্খায়ী অসুখ, পুষ্টির অভাব বা অতিরিক্তমেদবহুল আতঙ্ক বা ভয়, জরায়ু মুখের অসুখ, জরায়ুর অসুখ, জন্মগতভাবে জরায়ু না থাকা বা ছোট জরায়ু, এক বা দুই শৃঙ্গযুক্ত জরায়ু, দুই ভাগে বিভক্ত জরায়ু, জরায়ুতে জীবাণুর সংক্রমণ (টিবি, গনোরিয়া) জরায়ুতেটিউমার ইত্যাদি।

মহিলাদের বìধ্যত্বের আরেকটিগুরুত্বপূর্ণ কারণ এন্ডোমেট্রিওসিস, যা সাধারণত ৩০-৩৫ বছর বয়স্ক মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা দেয়। বিলম্বে বিবাহ এবং সন্তান সম্ভাবনা বিলম্বিত করা এর একটি প্রধান কারণ। এর প্রধান লক্ষণ ঋতুস্রাবের সময় ব্যথা, যৌন মিলনে ব্যথা, তলপেটে ব্যথা। ডিম্বনালীর অসুখেরকারণেও বìধ্যা হতে পারে। ডিম্বনালীর প্রধান কাজ ডিম্বাণু ও শুক্রকীটের মিলনের স্খান ঠিক করা এবং ভ্রূণের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনের সৃষ্টি করা। এই ডিম্বনালী যখন জীবাণুর দ্বারা সংক্রমিত হয় তখন এর শ্লেষ্মাঝিল্লির ক্ষতি হয়। আমাদের দেশে টিবি, গনোরিয়া, স্ট্যাকাইলোকক্কাস, স্ট্রেপ্টোকক্কাস, বিকোলাই ইত্যাদি জীবাণুর সংক্রমণ ডিম্বনালীতে বেশি হয়ে থাকে।শল্য চিকিৎসার কারণেও ডিম্বনালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যেমন¬ ডিএন্ডসি, এন্ডোমেটিয়াল বাইয়পসি বা অ্যাপেন্ডিক্সের অপারেশনের ফলেও ডিম্বনালীর অসুখ হতে পারে।

হরমোনের অভাবেও বìধ্যত্ব দেখা দেয়। মহিলাদের ঋতুচক্র এবং ডিম্বাণু নির্গত হওয়া নানা অন্তস্রাবী গ্রন্থির হরমোনের ওপর নির্ভরশীল। এর যেকোনো হরমোনের অভাবে তাই বìধ্যত্ব দেখা দিতে পারে। যেমন- হাইপোথেলামসের আঘাত, টিউমার, পিটুইটারি গ্রন্থির টিউমার; অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির টিউমার, থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ, ডিম্বাশয়ের অসুখ¬ টিউমার, সিস্ট ইত্যাদি কারণে হরমোনের গোলমাল দেখা দিয়ে থাকে।

নারীর শরীরজাতঅ্যান্টিবডিও অনেক সময় পুরুষের শুক্রকীট ধ্বংস করেদেয় বা শুক্রকীটের জরায়ু মুখে প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে। এই অ্যান্টিবডি পুরুষের রক্ত বা বীর্যে এবং মেয়েদের রক্ত বা জরায়ুমুখের শ্লেষ্মাঝিল্লিতে পাওয়া যায়।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, মানসিক চাপ। অত্যধিক মানসিক চাপ বìধ্যত্বের কারণ হতে পারে বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এখন একমত। এমনকি সন্তান লাভের অদম্য বাসনাও সন্তান ধারণে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। এ জন্য সন্তান লাভে ইচ্ছুক দম্পতিদের সম্পূর্ণস্বাভাবিক মানসিক ও শারীরিক অবস্খাতেই সন্তান লাভে চেষ্টা করা উচিত। তাই কোনরূপ ভয়, আতঙ্ক, দুশ্চিন্তানা করে মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত কামনা করে সন্তানলাভের চেষ্টা করলে তারা সফল হতে পারবেন।

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাঃ
হোমিওপ্যাথি একটি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান। বিজ্ঞ চিকিৎসক, যারা এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত, তারা নি:সন্তান দম্পতিদের চিকিৎসা দিতে পারেন। এ ব্যাপারে বাজারে যেসব বাণিজ্যিক প্রচারণা রয়েছে তাতেপ্রলোভিত না হয়ে আধুনিক উচ্চশিক্ষিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে তিনি রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন। মনে রাখবেন, চিকিৎসায় যারা গ্যারান্টি দেবে তারা আপনার সাথে প্রতারণার আশ্রয় নেবে। সঠিক কারণ নির্ণয় করে সঠিক পদ্ধতিতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করলে নি:সন্তান দম্পতিরা উপকার পাওয়ার আশা করতেপারেন।

ব্রেস্ট ক্যান্সার ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

আমাদের শরীরে সর্বদায় স্বাভাবিক নিয়মে নতুননতুন কোষ সৃষ্টি হয় প্রয়োজন মোতাবেক স্তন ও এর বাহিরে নয়। যদি কোন কারনে অপ্রোজনীয় ভাবে ব্রেস্টে নতুন কোষ সৃষ্টি হয়,

আর স্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি ঘটিতে থাকে এবং চাকা অথবা পিন্ড আকার ধারন করতে থাকে তবে একে স্তন টিউমার বলা হয়। এ টিউমারটি যদি স্বাভাবিককোষ ধারা হয়ে থাকে তবে তাকে অক্ষতিকারক /বিনাইন টিউমার বলে।যা ক্যান্সার নয়। আর যদি অস্বাভাবিক কোষ ধারা তৈরি হয়ে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটতে থাকে তবেই তাকে ক্যান্সার বা ম্যালিগন্যান্ট বলা হয়। এর সূত্র পাত কোষে হয়ে গ্ল্যানডিউলার টিস্যু সহ স্তনের সবকটি লোবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে ডাক্টস এবং লবিউলসে।
স্তন ক্যান্সার কোন কোন কারনে হতে পারেঃ স্তন ক্যান্সারের এবং যে কোন ক্যান্সারেরই প্রকৃত কারণ কারো জানা নেই। তবে কিছু কিছু ফ্যাক্টুরকে জোরালো ভাবে দায়ী করা হয়ে থাকে বিশেষ করে যেমন ৪০ উর্ধে বেশী বয়সে এর ঝুকিটা বেশী দেখা যায় বা হয়ে থাকে। কিন্তুু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য বর্তমানে ১৮ বৎসরের এবং ২৬ বৎসরের দুটি মেয়েকে চেম্বারে ব্রেস্ট ক্যান্সার সহ আসতে দেখা গেল।

বংশানুক্রমে :-
এই মাত্র উপরে যা পড়লেন , ২টি মেয়ের কথা তাদের পারিবারিক ইতিহাস নিয়ে দেখা গেল একজনের মায়ের বর্তমানে ক্যান্সার আছে, অন্যজনের বংশেও আছে। মা, বোন, খালা, ফুফুদের থাকলে ঝুকিটা বেড়েযায় কয়েক গুন। রক্তের সম্পর্কিত কোন পুরুষের ক্যান্সার থাকলেও উক্ত মহিলার ঝুকি থাকে।

ফ্যামিলিয়াল/জেনিটিক:- ব্রেস্ট ক্যান্সার জিন বিআরসিএ বা বিআরসিএ যে কোনটা বহন করলে ঝুকি থাকে।

মা হবার বয়স :- ৩০ বৎসরের বেশী বয়সে, যদি কেউ মা হয় তবে তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাটা বেশি থাকে।
মদ্যপান :- মদ্যপান স্তন ক্যান্সার সহ,মুখ, গলা সহ অন্যান্য অর্গানের ক্যান্সার ঝুকি বাড়ায়।

ধূমপান :- যে সকল মায়েরা ধুম পানের সাথে জড়িত বা যাদের ঘরে ধূম পায়ী আছে তাদের থেকেও আক্রান্ত হতে পারেন।

সাদা/জর্দ্দা/ পান মশলা :- এক গবেষণায় দেখা গেছে সুপারী তা বাড়িয়ে দিতে পারে। আর ধূমপানের চেয়ে সাদা/জর্দ্দা বেশি ক্ষতি করতে পারে।

অতিরিক্ত ওজন :- যাদের শারীরিক ওজন বেশি থাকে, শরীরে মেদের পরিমান বেশি থাকে।

অতিরিক্ত ফেটি খাবার :- যাদের অভ্যাস আছে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার খাওয়া, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাদ্য বেশি খাওয়া, যারা শাক জাতীয় খাবার কম খায়,গোস্ত জাতীয় খাবার বেশি খায়।

অতিরিক্ত রেডিয়েশন :- যাদের শরীরে খুব বেশি এক্স্-রে করা হয়েছে, যারা খুব বেশি রেডিয়েশন চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের এ ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে অন্যদের তুলনায়।

ঔষধের অপব্যবহার :- কিছু কিছু ঔষধ ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। একথাটা শুনলেই অনেকে মনে করেন যে এলোপ্যাথিক ঔষধেই তা করে থাকে, তা ঠিক নয়। অনির্বাচিত প্রয়োজনের অতিরিক্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধও এমনটি করতে পারে।যার ফলে এক ডোজ খাওয়ার পর রোগীর পুনরায় ডায়াগনোসিম ছাড়া ঔষধ সেবন ঠিক নয়।

মেনোপজ :- দেরিতে মেনোপজ হলেও ঝুকি আছে।আবার কেউ মনে করে মেনোপজ আসা মানে যৌনজীবনের পরিসমাপ্তি তাই হরমোন জাতীয় ঔষধ খেয়ে মাসেক ¯্রাব দীর্ঘায়িত করতে চান।যা স্তন ক্যান্সার সহ অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুকি বাড়িয়ে দিতে পারে। জন্ম নিয়ন্ত্রন বড়িকেও এব্যারে দায়ী করা হয়ে থাকে।

স্তন সিস্ট বা চাকা :- দীর্ঘদিন স্তনে সিস্ট থাকলে, যদি বড় হয়ে যায় সাথে অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধি থাকে।স্তনের চাকা বা বিনাইন টিউমার যদি এমনি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবংপাশাপাশি অস্বাভাবিক থাকে।

আপনি যে ভাবে বুঝবেন স্তন ক্যান্সার হয়েছেঃ যে কোন স্তনে প্রথমে এক বা একাধিক ছোট আকারে টিউমার/চাকা বা ছোট গোটা আকারে দেখা দেয়।

মাসিক ঋতু¯্রাবের সময় বেশি অনুভব হতে থাকে।

স্তনের বোটা হতে রস নিঃসৃত হতে পারে, তা পরিস্কার বা রক্তের মত হতে পারে।

প্রথম পর্যায়ে স্থানীয় লসিকা গ্রন্থিতে থাকে তেমন বেদনা থাকে না।

চাকা বা গুটি নড়া-চড়া করানো যায়।

পরবর্তীতে নড়া-চড়া না করে স্থির থাকে।

ব্যথা বেদনা হতে থাকে। ব্যথার ধরণ বিভিন্ন রকম হতে পারে।চিড়িক মারা ব্যথা,ঝিমধরা ব্যথা বা সর্বদায় ব্যথা থাকা।

অস্বাবধানতায় চাপে, রিক্সার ঝাকিতে ব্যথা হতে পারে।

ব্রেস্টের আকার-আকৃতির পরিকর্তন হতে পারে।

স্তনের ত্বকের কালার পরিবর্তন হতে পারে।

যে কোন এক স্তনের ক্যান্সার পরবর্তীতে উভয় স্তনে,বুকের হাড়ে, গলার নীচে, পরবর্তীতে হাড়ে শিরদাড়ায় এবং শরীরেঅন্যান্য অর্গানে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

স্তন ক্যান্সারের স্টেজ:- স্তন ক্যান্সারের তীব্রতানুযায়ী

স্টেজ- ১ ইঞ্চির কম স্থানে কোথাও না ছড়িয়ে সীমাবদ্ধ থাকলে।
স্টেজ-২: ১ ইঞ্চির কম বটে কিন্তু লসিকা গ্রস্থিতে ছড়িয়েছে বা ২ ইঞ্চি পরিমানে কিন্তু কোথাও ছড়ায়নি।
স্টেজ-৩: টিউমারের আকার ২ ইঞ্চির বেশি হলে এবং লসিকা গ্রন্থিতে ছড়িয়ে পড়লে। বা যে কোন আকারের টিউমার গ্রন্থি গুলোর একে অপরের সাথে লেগে গেলে।
স্টেজ-৩/বি: যে কোন আকারের টিউমার, ত্বকে, স্তনের নীচে, বুকে ছড়িয়ে পড়লে বা ইন্টারনাল মেমারী লসিকা গ্রন্থিতে অবস্থান করে।
স্টেজ-৪: এঅবস্থায় ক্যান্সার আর স্তনে সীমাবদ্ধ না থেকে দূরবর্তী স্থানে যেমন- দূরবর্তী লসিকা গ্রন্থি, ফুসফুস,বুকে,হাড়ে ছড়িয়ে যায়।

স্তন ক্যান্সার নির্ণয় :-
আপনি নিজেই আপনার স্তন পরীক্ষা করে দেখেন কোন রকম অসাধারনতা পরিলক্ষিত হয় কিনা। এবং আজকের লিখিত উপসর্গের কোনটা উপস্থিত আছে কিনা। শুধু মাত্র টিউমার হলেই ক্যান্সার নয়। প্রয়োযনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এ ব্যাপারে। আক্রান্ত ব্রেস্টের এক্স-রে করে। আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে, মেমোগ্রাপি করে, এফ এন এ সি করে, বায়োপসি করে জানতে পারেন কোন অবস্থায় বা কোন স্টেজে আছে।

চিকিৎসা :-
প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে হোমিওপ্যাথিতে সম্পূর্ণ এবং সফল ভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব। হোমিওপ্যাথিতে বর্তমানে অনেক আরোগ্য দানকারী মেডিসিন রয়েছে যে গুলোর শর্ত হলো প্রাথমিক পর্যায় রোগ নির্ণয়, সঠিক এনামনসিস,এবং পাওয়ার, সেবন পদ্ধতি ও নির্বাচনসঠিক হলে ইনশাআল্লাহ ভাল হবেন। যে সকল হোমিওপ্যাথিকঔষধ গুলো বেশি ব্যবহৃত হয় যেমন- ফাইটোলক্কা, ব্রায়োনিয়া, আর্সেনিকএলব্ , কার্ব এ্যানিমেলিস, কোনিয়াম মেকুল্যাটাম, ক্যার্সিনোসিন, এক্স-রে ইত্যাদি। প্রয়োজনে সার্জেক্যাল চিকিৎসা নিতে হবে। ক্যামোথেরাপি, রেডিওথ্যারাপি সাহায্য করতে পারে।

স্তন ক্যান্সারপ্রতিরোধের উপায় :-

যত তাড়াতাড়ি আপনার রোগ ধরা পড়বে তত তাড়াতাড়ি সুচিকিৎসা সম্ভব।
স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে।
অতি লজ্জা চেপে যাওয়া থেকে বিরত হয়ে গার্ডিয়ান/চিকিৎসককে বিস্তারিত জানাতে হবে।
বয়সন্ধি কাল শুরু থেকে নিয়মিত নিজে নিজে স্তন পরীক্ষা করতে হবে।
প্রতি বৎসর চিকিৎসক দ্বারা আল্ট্রাসনোগ্রাম/মেমোগ্রাফি করানো উচিত।
৪০ বৎসরের বেশি বয়সিদের প্রতিবছর ১ বার মেমোগ্রাফি করানো ভাল।
যাদের বংশেআছে তাদের অতি সচেতন হতে হবে।
যাদের নিজ পরিবারে বোন, মা,খালা, ফুফুর থাকলে অতিসত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ, পরীক্ষা সকল বিষয়ে যতœবান হতে হবে।
যেহেতু সুনির্ধারিত কোন কারণ জানা নেই সেহেতু সম্ভাব্য ফ্যাক্টর গুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
পানের সাথে জর্দ্দা সাদা পাতা, পান মশলা পরিত্যাগ করতে হবে।